প্রথম আলোর অনুসন্ধানে ঘোষণার বাইরে আরও অনেক প্রতিষ্ঠানে তাঁর মালিকানা থাকার তথ্য মিলেছে। যেমন পি কে হালদার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান (আইজিডব্লিউ) ফার্স্ট কমিউনিকেশনের পরিচালক। সুখাদা লিমিটেডে পি কে হালদারের শেয়ার ৯০ শতাংশ ও তাঁর মা লীলাবতী হালদারের ৫ শতাংশ। আবার সুকুজা ভেঞ্চারের শেয়ার সুখাদা লিমিটেডের কাছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) নিয়ন্ত্রণ সুকুজা ভেঞ্চারের হাতে।
পিপলস লিজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল আনন কেমিক্যাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের। আনন কেমিক্যালের মালিক পি কে হালদার নিজেই বলে চিঠিতে জানিয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পি কে হালদারের মালিকানা থাকার তথ্য পাওয়া যায়। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে বিভিন্ন নামে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) দখল করেন পি কে হালদার। সেই চার প্রতিষ্ঠানের একটি বিলুপ্তির পথে, বাকি তিনটিও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। প্রতিষ্ঠান দখল করার জন্য নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলেছেন তিনি, শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন, দখল করা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে টাকাও সরিয়েছেন। এমনকি দেশের বাইরেও কোম্পানি খুলেছেন।
এর বাইরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুবিধাভোগী পি কে হালদার বলে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেগুলো হলো বর্ণা, ইমেক্সোকো, আরবি এন্টারপ্রাইজ, এসএ এন্টারপ্রাইজ, সন্দীপ করপোরেশন, উইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল, পি অ্যান্ড এল ইন্টারন্যাশনাল, ড্রাই নুন অ্যাপারেলস ও সুখাদা প্রপার্টিজ।
এর আগে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দিয়েছিলেন আদালত। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পরই পদত্যাগ করেন। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, পি কে হালদার মূল ব্যক্তি, যিনি পুরো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গেছেন। তাই তাঁকে ফিরিয়ে এনে টাকা আদায় করলে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি এভাবে লুটপাটের বিচারও হতে হবে। কারণ, এ দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।