২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেপ্টেম্বর মাসে বন্দুকযুদ্ধের সংখ্যা ও ধরন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৩০টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৭ জন। ওই বন্দুকযুদ্ধগুলোর ১৪টি ঘটেছে পুলিশের সঙ্গে, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সঙ্গে আটটি, র্যাবের সঙ্গে সাতটি এবং বিজিবির সঙ্গে একটি।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে ৩১টি। নিহত হন ৩৭ জন। সাতটি ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আগে গ্রেপ্তার অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৭টি পুলিশ, ১২টি র্যাব ও দুটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে ঘটে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পাঁচটি ঘটনা ঘটে। তিনটি ঘটনা ঘটার পরপর পরিবারের তরফ থেকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ তোলা হয়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ১৩টি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার পর গত ৬ আগস্ট আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) দেওয়া ‘কক্সবাজারে সেনাবাহিনী প্রধান ও পুলিশ মহাপরিদর্শক কর্তৃক স্ব স্ব বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান’ শীর্ষক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এটাই শেষ ঘটনা। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডবিহীন একটি মাস পার হয়েছে, এটা সবার জন্যই সুসংবাদ। রাষ্ট্রযন্ত্র এত দিনে উপলব্ধি করেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার যে ‘শর্টকাট’ পদ্ধতি, সেটা কার্যকর নয়। বিচার বিভাগকে উপেক্ষা করার যে কৌশল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো অনুসরণ করছিল, সেটার ফল কত খারাপ, সেটা সবার কাছে এখন পরিষ্কার হয়েছে। তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি। বিনা বিচারে হত্যা করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব না।