পিএইচডি শুরু করার আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে প্রভাষক এবং সহকারী অধ্যাপক ছিলাম। এ কারণে তুলনামূলক আলোচনা আমার জন্য অপেক্ষাকৃত সহজ। আসলে যাঁরা পিএইচডি করতে অস্ট্রেলিয়া বা যুক্তরাজ্যে যান, তাঁরা যদি সেখানকার ইউনিভার্সিটিতে একাডেমিক হিসেবে থাকতে চান, তাঁদের আসলে সবকিছু আবার নতুন করেই শুরু করতে হয়। আমার বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে রীতিমতো শূন্য ধরেই অস্ট্রেলিয়াতে যেতে হয়েছিল। যেহেতু রিসার্চ পারফরম্যান্সকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়, আগের কাজের অভিজ্ঞতাকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না। এ ক্ষেত্রে আসলে একজন পিএইচডি স্টুডেন্টকে টিচিং (অথবা টিউটরিং) ও রিসার্চের মধ্যে ভালো সমন্বয় করতে হবে। খুবই উল্লেখযোগ্য হলো পিএইচডি চলাকালীন সুপারভাইজারের সঙ্গে উচ্চমানসম্পন্ন রিসার্চ আর্টিকেল লেখাটা এবং টিচিং শুরু করাটা। এই দুটির সমন্বয় যে ভালোভাবে করতে পারবেন, তাঁর তত দ্রুত চাকরি পেতে সহজ হবে। আর অধ্যাপক হওয়ার জন্য যেহেতু বিশ্বের উচ্চমানসম্পন্ন পাবলিকেশন প্রয়োজন পড়ে, পিএইচডির কাজটিই যেন উচ্চমানসম্পন্ন রিসার্চ আর্টিকেলে রূপান্তরিত হয়, তার জন্য খুব চেষ্টা করতে হবে।
আমার মতে, বাংলাদেশিরা বাইরে উচ্চমানসম্পন্ন রিসার্চে জড়িত থাকলে তা দেশের সুনাম বাড়ায়। বর্তমানে একজন মিসরীয়, একজন নাইজেরিয়ার, একজন ওমানি এবং একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আমার অধীনে পিএইচডি করছেন। বাংলাদেশসহ নয়টি (বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পর্তুগাল, নাইজেরিয়া) দেশের একাডেমিকদের সঙ্গে আমার রিসার্চ কোলাবোরেশন রয়েছে। সব মিলিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সব কাজেই সফলতার জন্য একটি অধ্যবসয় লাগে, লেগে থাকার প্রয়াস লাগে। সর্বোচ্চ একাডেমিক অবস্থানে যাওয়াটা যার স্বপ্ন, তাঁকে পিএইচডির সময়টাকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে।
*অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অব এবারডিন