এবারের বিশ্ব হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের আলোকে করোনাকালে নতুন বাস্তবতায় হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো এবং ইমিউনিটি বাড়াতে সবার প্রতি আমার নিম্নলিখিত পরামর্শগুলো মেনে চলার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি—
* যেকোন নতুন উপসর্গ যেমন জ্বর, শ্বাসকষ্ট শরীরব্যাথা অথবা ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* কিছু রুটিন পরীক্ষা করে নিজের শরীরের আপডেট অবস্থা জেনে নিন।
* বুকে ব্যাথা, চাপ অথবা শ্বাসকষ্ট হলে অবহেলা করবেন না।
* চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করবেন না। এ ছাড়া নতুন কোনো ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* ডায়াবেটিস থাকলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বাড়িতে গ্লুকোমিটার দিয়ে নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
* উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ওষুধ সেবন করতে ভুল করবেন না। রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। মাঝেমধ্যে রক্তের চাপ কত আছে, তা জেনে নিন।
* নিয়মিত হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়ামের অভ্যাস চালিয়ে যেতে হবে। বাড়িতে ট্রেডমিল থাকলে সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।
* কোষ্ঠকাঠিন্য এড়িয়ে চলুন।
* হার্টের কার্যক্ষমতা ভালো থাকলে পরিমিত পানি পান করবেন। হার্ট দুর্বল হলে বা এলভিইএফ কম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তরল গ্রহণ করুন।
* শাকসবজি, কাঁচা ফলমূল ভালো করে ধুয়ে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন।
* চিনি ও লবণ এড়িয়ে চলুন।
* শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
* ধূমপান করবেন না। এ ছাড়া সব রকমের তামাকজাতীয় দ্রব্য বর্জন করুন।
* করোনা প্রতিরোধক সব স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। হার্ট দুর্বল হলে বা এলভিইএফ কম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তরল গ্রহণ করুন।
অনেক হৃদরোগী যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, তাদের অনেকের শরীর ও মনের ওপর নেতিবাচক নানা প্রতিক্রিয়া হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাদের বলছি, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে যাপিত জীবনে ছন্দপতন হবে না। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করুন। জীবনকে জয়ী করতে হলে করোনাকে হারাতে হবে।
লেখক: অধ্যাপক, কার্ডিওলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কনসালট্যান্ট, কার্ডিওলজি, ল্যাব এইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল , ধানমন্ডি, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন